ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা : বর্তমানে গ্রাম অঞ্চলের বাজার গুলোতে অনেক পরিচিত একটি ফলের নাম হচ্ছে ড্রাগন ফল। ড্রাগন ফলকে দেখতে অদ্ভুত এবং অন্যরকম মনে হয়। কিন্তু ড্রাগন ফলের বিশেষ চাহিদা আছে বাজারগুলোতে।
অন্যান্য ফলগুলোর থেকে এর দাম তুলনামূলক বেশি হলেও এর পুষ্টিগণ এবং দেখতে আকর্ষণীয় মনে হয়। তাই আমরা এই আর্টিকেলে আপনাদের সুবিধার জন্য জানাবো, চাহিদা সম্পূর্ন ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
তাই আপনি যদি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে চান আমাদের লেখা আর্টিকেল সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন।
আর্টিকেল টপিকঃ
০১। ড্রাগন ফল কি?
০২। ড্রাগন ফলের উৎপত্তিস্থল
০৩। ড্রাগন ফলের পুষ্টি গুন উপাদান
০৪। ড্রাগন ফলের স্বাস্থ্য গুণ
০৫। ড্রাগন ফলের চাষ
০৬। ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
০৭। ড্রাগন ফল কিভাবে খাবেন
০৮। ড্রাগন ফল নিয়ে শেষ কথা
ড্রাগন ফল কি?
ড্রাগন ফল ক্যাকটাস জাতীয় গাছের ফল হিসেবে পরিচিত। ড্রাগন ফল হাইলসেরিয়াস ক্যাকটাস গাছে জন্ম হয়। ড্রাগন ফল ডিম্বা আকৃতির উজ্জ্বল গোলাপি রঙের এই ফলের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে- Hylocereus undatus. এ ড্রাগন ফলের গাছ হন লুলু ও কুইন বা রাতের রানী হিসেবে পরিচিত।
এরকারণ, ড্রাগন ফল গুলো ফুল শুধু মাত্র রাত করে ফোটে। ফুল গুলো লম্বাটে সাদা ও হলুদ রঙের হয়ে থাকে। অনেকটা “Knight Queen” ফুল এর মতো দেখায়।
কিন্তু ড্রাগন ফলের গাছ পাতা বিহীন। ফলের পাড়াগায়ন নিজে নিজেই হয়। অন্যান্য পতঙ্গ যেমন- মাছি, মৌমাছি এবং পোকা ও পাখির দ্বারা পরাগায়ন হয়। তারা পরাগায়ণ কে ত্বরান্বিত করে পরাগায়ন প্রক্রিয়াকে দ্রুত করে থাকে। তাছাড়া কৃত্রিম ভাবেও পরাগায়ন করা যায়।
ড্রাগন ফলের উৎপত্তিস্থল
ড্রাগন ফল দক্ষিণ মেক্সিকো, মতো আমেরিকায় খুব বেশি পরিমাণে ফলন হয়। সেন্ট্রাল আমেরিকাতে এর ড্রাগন ফলটি 13 শতাব্দীতে প্রথম উৎপত্তি হয়। অন্যান্য জায়গায় এর প্রচলন তখন শুরু হয় নাই। দক্ষিণ এশিয়ায় উৎপাদন শুরু হয় বিংশ শতাব্দীতে। এশিয়ার মধ্যে মালয়েশিয়াতে প্রথম ড্রাগন ফলের উৎপত্তি হলেও বর্তমান সময়ে ভিয়েতনামা বাণিজ্যিকভাবে সব থেকে বেশি ড্রাগন ফল চাষ করে থাকে।
উত্তর ড্রাগন ফল এখন দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মেক্সিকো এবং ইন্দোনেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হয় আমাদের দেশের চাষীদের কাছেও ব্যাপক জনপ্রিয়।
রিলেটেড আর্টিকেল:-
- আমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- আমের উপকারিতা ও অপকারিতা
- বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
- বাঙ্গীর উপকারিতা ও অপকারিতা
- কামরাঙ্গার উপকারিতা ও অপকারিতা
- বরিশালের বিখ্যাত খাবার
ড্রাগন ফলের পুষ্টি গুন উপাদান
পুষ্টিগণের দিক থেকে ড্রাগন ফল অনেক আদর্শ। এর ড্রাগন ফলে অল্প অল্প পরিমাণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আছে। ড্রাগন ফলে আইরন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবারের একটি ডিসেন্ট সোর্স। এ ড্রাগণ হলে প্রতি 3.5 আউন্স এবং 100 গ্রাম ্স পরিবেশন এর জন্য যে পরিমাণ পুষ্টি পাবেন সেগুলো হচ্ছে-
ক্যালোরি:
এখানে আপনারা ৬০ ক্যালোরি শক্তি পাবেন। মানে ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফল থেকে এই পরিমাণ ক্যালোরি পাওয়া যাবে, যা ক্যালরি চাহিদা সম্পন্ন হবে।
প্রোটিন:
এখানে প্রোটিনের মাত্রা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে 1.2 গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
চর্বি:
ড্রাগন ফল গুলোতে চর্বির পরিমাণ একেবারেই নাই। ফ্যাট নিয়ে কোন প্রকার চিন্তাভাবনার কারণ নেই।
কার্বোহাইড্রেট:
কার্বোহাইড্রট এর পরিমাণ মোটামুটি পরিমাণে রয়েছে। একটি ১৩ গ্রাম ড্রাগন ফলে 100 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে।
এ ছাড়া আরো রয়েছে- ফাইবার, ভিটামিন সি, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি।
ড্রাগন ফলের চাষ
ড্রাগন ফলের চাষ ধারণা পেতে, আপনারা সরাসরি ইউটিউবের ভিডিও দেখতে পারেন। ড্রাগন ফলের যেহেতু অনেক চাহিদা রয়েছে তাই আপনারা যে কোন দেশ থেকে ড্রাগন ফল একটা শুরু করতে পারেন ইউটিউব ভিডিও গুলো দেখে।
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতা অনেক সে তুলনায় অপকারিতা অনেক কম। তো আমরা আপনাকে শুরুতে জানিয়ে দেব ড্রাগন ফলের উপকারিতা। তাই আপনারা এখানে একত্রিতভাবে জানতে পারবেন ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
উপকারিতা:
ড্রাগন ফলের উপকারিতা গুলোর নিম্নরূপঃ
দীর্ঘস্থায়ী রোগের জন্য উপকারী : ড্রাগন ফলে থাকা এন্টি এক্সিডেন্ট গুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে থাকে। যা অস্থির কোন কোর্সের ক্ষতি করে যা প্রদাহ এবং রোগের কারণ হতে পারে। ড্রাগন ফলের মত এন্টি এক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এটি মোকাবেলা করার জন্য মুখ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ এন্টি এক্সিডেন্ট ফ্রি মেডিকেল নিরপক্ষে কাজ করে এভাবে কোর্সের ক্ষতি এবং প্রদাহর প্রতিরোধ করে থাকে।
ড্রাগন ফলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী যে উপকারিতা রয়েছে সেগুলোর নিম্নরূপ-
ভিটামিন সি: পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় ভিটামিন সি গ্রহণ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক পাওয়া গেছে। যা মানুষের শরীরে ক্যান্সার দূর করে এবং ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে।
বেটালাইনস: টেস্ট টিউব পরীক্ষায় পাওয়া গেছে বেটালাইন অ্যাক্সিডেটিভ স্টেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এবং ক্যান্সার কোচগুলোকে দমন করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।
ক্যারোটিনয়েডস: বিটা লাইক অপেন হচ্ছে উদ্ভিদের রঙ্গক। ড্রাগন ফলকে এর প্রাণবন্ত রং প্রদান করে। ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার গুলো ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
তো আমরা জানতে পারি প্রাকৃতিকভাবে গ্রহণ করা আমাদের জন্য অনেক উপকারী হয় তাই এর জন্য একটি ফল হিসেবে পরিচিত।
ফাইবারে ভরপুর ড্রাগন ফল : খাদ্য তালিকায় থাকা ফাইভার হজম শব্দে কার্বোহাইড্রেট যা সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মহিলার জন্য প্রতিদিন ২৫ গ্রাম এবং পুরুষদের জন্য ৩৮ গ্রাম ফাইবার গ্রহণ করতে পরামর্শ দেন।
এন্টি এক্সিডেন্ট এর মত কৃত্রিম ফাইবার খাবার এর ফাইবারের মতো স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে পারে না। প্রতি এক কাপ পরিবেশন ৭ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায় এই ড্রাগন ফল থেকে।
ফাইবার সম্ভবত হজম এর ক্ষেত্রে তার ভূমিকা রাখে সব থেকে বেশি। একটি গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এটি জিন যুগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা, ডায়াবেটিস পরিচালনা ও স্বাস্থ্যকর শরীরের ওজন বজায় রাখতে সর্বোচ্চ ভূমিকা থাকে।
কিছু পর্যবেক্ষণ গবেষণার মাধ্যমে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে উচ্চ ভাইবার যুক্ত খাবার কোলন ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকে। উচ্চ ফাইবার সামগ্রী আপনাকে দৈহিক চাহিদার খাদ্য মান গুলো পূরণ করতে সহায়তা করে। কিন্তু এটি নজর রাখতে হবে গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবারের ত্রুটি থাকতে পারে। বিশেষ করে আপনি যদি কম ফাইবার যুক্ত খাবারের অভ্যস্ত থাকেন। সেক্ষেত্রে পেটে অস্তিত্ব এড়াতে আস্তে আস্তে ডায়েটারি ভাইবার গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং তরল পান করতে পারেন।
তো বন্ধুরা উপরের আলোচনায় আপনারা জানতে পারলেন ড্রাগন ফলের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে। তো আমরা প্রথমেই বলেছি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা উভয় রয়েছে। তো এখন আমি আপনাকে জানাবো ড্রাগন ফলের অপকারিতা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত।
ড্রাগন ফলের অপকারিতা
সব দিক থেকে ড্রাগন ফল নিরাপদ মনে করা হয়। কিন্তু একটি বিষয়ে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী। উক্ত ড্রাগন ফলে এলার্জির জন্য বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু সেটি খুব বিরল। তাছাড়া যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তাদের জন্য এই ড্রাগন ফল নিয়মিত গ্রহণে এলার্জি সমস্যা বৃদ্ধি করতে পারে তাই তাদের এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে বিশেষ করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
তাছাড়া আরও একটি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে যেসব নারীদের খাবারে এলার্জি জনিত সমস্যা নেই তাদের মাঝে কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য ফলের সাথে ড্রাগন ফল মিশিয়ে জুস তৈরি করে খাওয়ার ফলে অ্যানাফিল্যাকটিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।
তাই অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ড্রাগন ফল খাওয়ায় কোন সমস্যার প্রভাব দেখা গেলে সরাসরি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
ড্রাগন ফল নিয়ে শেষ কথাঃ
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা বিষয়ে আজকের এই পোস্টে বিস্তারিত জানিয়ে দেয়া হলো। আপনি যদি ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আরো বাড়তি কোন কিছু জানতে চান অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ...
ট্যা*গস:-
ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা। ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম। ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। ড্রাগন ফল কত টাকা কেজি। ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা। ড্রাগন ফলের দাম। লাল ড্রাগন ফলের উপকারিতা। সাদা ড্রাগন ফলের উপকারিতা
You must be logged in to post a comment.