রাগ নিয়ন্ত্রণঃ সুস্থতার অন্যতম উপায়। রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন কার্যকরী ১০টি উপায়ে!

adx Ar
Adx AR

 

রাগ হলো মানুষের আবেগের একটি বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু রাগ মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে, রাগের বিস্ফোরণ ঘটলে, এর গুরুতর পরিণতি হতে পারে পরস্পর সম্পর্ক, স্বাস্থ্য, মনের অবস্থা—সবকিছুর ক্ষেত্রেই।

কারও প্রতি অন্যায়-অবিচার হলে তার রেগে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু তার মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়াটা অনেক ক্ষতির কারন ।

অনেকে খুব বদমেজাজি, কথায় কথায় রেগে যান, মনে হতে পারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে এটি। কিন্তু যা আমরা ভাবি এর চেয়ে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি আমাদের রাগের ওপর। আমরা যদি অন্যকে আহত না করে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করি, তখন নিজেরও ভালো লাগে।

বেশি বেশি রাগ মানুষের ক্ষতি করে। শরীরের ক্ষতি, মনের ক্ষতি, জীবিকা ও পেশার (ক্ষতি), এমনকি স্বজনের সাথে সম্পর্কও নষ্ট হতে পারে এই রাগের জন্য।

রাগ দমন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। রাগ মানুষকে জাহান্নামের ইন্ধন বানিয়ে ফেলে। কুরআন হাদিসে রাগ দমনের ব্যাপারে অসংখ্য নির্দেশ এসেছে। রাগ দমনে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশ তুলে ধরা হলো-

 

حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا أَبُو بَكْرٍ ـ هُوَ ابْنُ عَيَّاشٍ ـ عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَوْصِنِي‏.‏ قَالَ ‏"‏ لاَ تَغْضَبْ ‏"‏‏.‏ فَرَدَّدَ مِرَارًا، قَالَ ‏"‏ لاَ تَغْضَبْ ‏"‏‏.‏

 

আবূ হুরায়রা (রাঃ)থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,

এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট বললঃ আপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি রাগ করো না।। লোকটি কয়েকবার তা বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেক বারেই বললেনঃ রাগ করো না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৭৩)সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬১১৬ ।

 

যেহেতু রাগ দমন করা অত্যন্ত কঠিন কাজ।সেহেতু যে ব্যক্তি তা করতে সক্ষম হবে সেই দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াব। রাগ দমনকারীদের প্রশংসায় আল্লাহ বলেন, ‘যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, (তারাই মুহসিন বা সৎকর্মশীল) বস্তুতঃ আল্লাহ সৎকর্মশীলদিগকেই ভালবাসেন। (সুরা আল ইমরান : আয়াত ১৩৪)

 

রাগ দমনকারীর ব্যাপারে আরো বলা হয়েছে,

 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ ‏"‏‏.‏

 

আবূ হুরায়রা (রাঃ)

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই আসল বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।[মুসলিম৪৫/৩০,হাঃ ২৬০৯, আহমাদ ৭২২৩] আধুনিক প্রকাশনী-৫৬৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন-৫৫৭১) সহিহ বুখারী,হাদিস নং ৬১১৪

 

রাগের সময় মানুষ এমন কথা বলে ও এমন কাজ করে যার কারণে তার অন্তরে পরবর্তীতে অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং সে লজ্জিত হয়। এমনকি রাগের কারণে অন্তর হতে পবিত্র ঈমান দূরীভূত হয়ে যায়।

 

রাগ দমনের জন্য রাসুল (সাঃ) একটি দোয়াও শিখিয়ে দিয়েছেন। তা হলো (اعوذ بالله من الشيطان الرجيم) আউযু বিল্লাহি মিনাশ শায়তনির রজীম। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩২৮২) 

রেগে গেলে প্রয়োজনে হাটতে বেরিয়ে পড়ুন। যে পরিস্থিতি রাগিয়ে দিল, সেই জায়গা থেকে সরে আসুন।প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে হাঁটুন।ভাল কোনো চিন্তা মাথায় নিয়ে আসুন।প্রয়োজনে অজু করুন।কেননা হাদিসে আছে-

অযু দ্বারা রাগ দমন করা যায়(আবু দাউদ,হাদিস নং-৪৭৮৪)

 

তাই আসুন, আমরা যেকোনো পরিস্থিতিতে হঠাৎ রেগে না গিয়ে বরং ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতির মোকাবেলা করি।নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রন করি। হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে বরং রাগ ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করি।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে তথা সমগ্র মানব জাতিকে রাগ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণে ধীরস্থিরভাবে কাজ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

(ভুলক্রুটির জন্য ক্ষমাপ্রার্থী)

adx ar

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

adx ar
Comments

You must be logged in to post a comment.

adx ar
POPULAR ARTICLES
About Author