ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকা (নিজেকে ফিট রাখার সহজ ফর্মুলা)

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের তালিকা : বর্তমান সময়ে আমরা যারা কর্ম করি, শুধুমাত্র খাবার জন্য। এক্ষেত্রে অনেকেই রয়েছে, মাসে হাজার হাজার টাকা রোজগার করার পরেও তেমন ভালো ভালো খাবার প্রতিদিন খাবার তালিকায় রাখেন না।     

যার ফলে, মানুষের শরীরে কোন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি দেখা দিলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা দেখা দেয়। উক্ত পুষ্টির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ক্যালসিয়াম। মানুষের শরীর ঠিক রাখার জন্য অবশ্যই ক্যালসিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আমি আশা করব, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করা। 

বিশেষ করে মহিলাদের অবশ্যই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। তাই আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে, আপনাদের সুবিধার জন্য জানানো হবে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত। যে খাবারের তালিকা গুলো আপনি যদি প্রতিদিন খাবার মেনুতে রাখেন, তাহলে আপনার নিজের শরীরকে ফিট রাখতে পারবেন। 

তো আসুন ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যায়। যা সঠিকভাবে জানতে পারলে নিজেকে ফিট রাখতে পারবেন।আর আপনি যদি ফিট থাকেন তাহলে, যে কোন কাজ সহজেই করতে পারবেন। 

আর্টিকেল টপিকঃ

• ক্যালসিয়াম কি?
• আপনার শরীরে ক্যালসিয়াম এর ভূমিকা কি?
• আপনার শরীরে কি পরিমাণ ক্যালসিয়াম দরকার?
• ক্যালসিয়াম জাতয়ি খাবার
• 01. সবুজ শাকসবজি
• 02. লেবু এবং মসুর ডাল
• 03. ক্রসিফেরাস সবজি
• 04. শুকনো ফল
• 05. কমলা এবং আঙুর
• 06. রেরি
• 07. বীজ
• 08. দুধ
• 09. পনির
• 10. দই
• 11. টফু
• 12. ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার
• ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট সম্পর্কে
• শরীরে অত্যধিক ক্যালসিয়াম থাকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া
• ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের কিছু প্রশ্ন ও উত্তর-
• আমি কিভাবে, প্রাকৃতিক ভাবে শরীরে ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ বাড়াতে পারি?
• ডিম কি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ?
• দুধের চেয়ে ক্যালসিয়াম এর ভালো উৎস আর কী হতে পারে?

ক্যালসিয়াম কি?

আমরা জানি ভিটামিন ডি, আয়রন মাইক্রোনিউ ট্রিয়েন্ট এর এর মতো ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরে পাওয়া এক ধরনের খনেজ। এগুলো শরীরের হাড়, মাংস পেশির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এছাড়া স্নায়ুতন্ত্র কে সঠিক ভাবে কাজ করার জন্য সাহায্য করে থাকে। 

এক্ষেত্রে প্রায় ৯৯% ক্যালসিয়াম আর ও দাঁতে জমা হয়ে যায়। আর বাকি ১% শরীলে রক্ত, বেশি ও কোষের তরল পদার্থ-এ জমা হয়। যে কোন মহিলাদের বৃদ্ধ বয়সে অস্টিওপরোসি’স প্রতিরোধে অনেক পরিমাণ ক্যালসিয়াম দরকার হয়। তার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার রাখা প্রয়োজন। ক্যালসিয়াম এমন একটি বিষয় যা মানুষের শরীরকে ফিট রাখতে সহায়তা করে।

আপনার শরীরে ক্যালসিয়াম এর ভূমিকা কি?

মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। তো আমরা আপনার সুবিধার জন্য এখানে ক্যালসিয়াম আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে, কি কি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সে বিষয়ে জানিয়ে দিচ্ছি। যেমন-

• শরীরে ক্যালসিয়াম জনিত অভাবে হাঁটু ও জয়েন্ট গুলো ব্যথা দিলে তা নির্মূল করে। 
• শরীরে রক্ত সঞ্চালনের জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। 
• মাংস-পেশি ফিট রাখার জন্য ক্যালসিয়াম অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 
• মহিলাদের গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। 
• মানুষের হরমোন ও অন্যান্য রাসায়নিক সক্রিয় করে থাকে। 
• মানুষ এর ওজন ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। 
• মানুষের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধলে সেটি স্বাভাবিক করতে সহায়তা করে। 
• স্নায়ুতন্ত্র-এ সংকেত পেরন ও গ্রহণ করতে সহায়তা করে। 
• হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। আরো ইত্যাদি। 

আপনার শরীরে কি পরিমাণ ক্যালসিয়াম দরকার?

তো আপনাদের বয়স ভীতিতে শরীরে কি পরিমানের ক্যালসিয়াম দরকার সে বিষয়ে আমরা উপরে তালিকাভুক্ত করে জানিয়ে দিলাম। এখন আমি আপনাকে জানাবো ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত যে খাবারগুলো খেলে নিজেকে ফিট রাখতে পারবেন সারা জীবন। 

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকা

01. সবুজ শাকসবজি

02. লেবু ও মসুর ডাল

আপনারা প্রতিদিন খাবার তালিকায় শাকসবজি ‘র পাশাপাশি শরিলে ক্যালসিয়াম বাড়ানোর জন্য অবশ্যই লেবু ও ডাল খেতে হবে। জিঙ্ক ও আয়রন এর পাশাপাশি আপনারা ছোলা বুট, মটরশুটি ও ডালগুলোর মধ্যে ক্যালসিয়াম পেয়ে যাবেন। এগুলো আপনারা বাজার থেকে অনেক অল্প দামে কিনে নিতে পারবেন।

তো আমরা এখন আপনাকে জানাবো লেবু ও মসুর ডালের ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সম্পর্কে বিস্তারিত। তার জন্য নিচের তালিকা টি দেখুন।

03. ক্রসিফেরাস সবজি

আমরা বাজারে গেলে দেখতে পারি বিভিন্ন ধরনের সবজি পাওয়া যায়। তার মধ্যে সবথেকে ক্যালসিয়াম যুক্ত সবজি হচ্ছে- ক্রসিফেরাস সবজি। এই সবজিগুলোকে মূলত ব্রাসিকা সবচেয়ে হিসেবে মনে করা হয়। এইসব যেগুলো পাতাযুক্ত। যার মধ্যে রয়েছে, বাঁধাকপি তার উদাহরণ। 

উক্ত সবচেয়ে প্রধান কাজ হচ্ছে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা। তাই আপনার শরীরে যদি ক্যালসিয়ামের ঘাটতে থাকে তাহলে আপনারা এ ধরনের ক্রসিফেরাস সবজি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকা হিসেবে রাখুন। 

04. শুকনো ফল

শরীর ঠিক রাখার জন্য আপনারা প্রতিদিনের ব্রেকফাস্টে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার হিসেবে রাখতে পারেন শুকনো ফলমূল। ক্যালসিয়াম এর উৎসের মধ্যে শুকনো ফলমুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শুকনো ফলমুল শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারে খাদ্য। 

এই শুকনো ফলমুল পুষ্টিকর উপাদানের সমৃদ্ধ। এগুলোর মধ্যে ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাই আপনারা ব্রেকফাস্ট থেকে শুরু করে সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে শুকনা ফলমুল ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার তালিকায় হিসেবে রেখে দিতে পারেন।

শুকনো ফল গুলো হচ্ছে- বাদাম, কিসমিস, আপেল, ডুমুর, ডালিম, এপ্রিকট ইত্যাদি। 

05. কমলা এবং আঙ্গুর

মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব পূরণ করার জন্য ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার এর গুরুত্ব অনেক। আর ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের মধ্যে আপনারা কমলা ও আঙ্গুর রাখতে পারেন। কমলা ও আঙ্গুর ফলগুলো যেমন সুস্বাদু তেমনে অনেক পুষ্টিকর। 

এই কমলা ও আঙ্গুর গুলোতে অনেক পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে। এ ধরনের খাবারগুলোকে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার হিসেবে গণ্য করা যায়। ক্যালসিয়াম এর পাশাপাশি এই ফলগুলোতে অনেক পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। যা মানুষের শারীরিক শক্তি জোগাতে সক্ষম। এ ফলগুলো খাবার ফলে রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

06. বেরি

বর্তমান সময়ে এমন কোন মানুষ নেই যারা ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার বেরি স্বাদ পছন্দ করেন না। সকলেই এই খাদ্য পছন্দ করে থাকেন। এই খাদ্য তে রয়েছে অনেক স্বাদ তেমনই পুষ্টি। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের কথা বলতে গেলে, বেরি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এখানে রয়েছে- মাইক্রোনিউ ট্রেয়েন্ট। বেড়ে খাওয়া মূলত হাড়ের জন্য উপকারী।

07. বিভিন্ন ধরনের বীজ

স্বপ্না ফলগুলো ছাড়াও কিছু বিষ খাওয়ার ফলে উচ্চ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। উক্ত বীজগুলো আপনারা দুধে মিশিয়ে খেতে পারবেন। যদিও উক্ত বীজগুলোর মধ্যে কিছু বিজ সারারাত পানিতে/ জলে ভিজিয়ে রাখলে সকালে উঠে খাওয়া যায়। 

কিন্তু কারো যদি বাদাম বেজ থেকে এলার্জি হয় তাহলে সেগুলোকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। তো আসুন বিভিন্ন ধরনের বীজ এ ক্যালসিয়াম রয়েছে, সে বিষয়ে জেনে নেয়া যায়।

08. দুধ

মানুষের দৈনন্দীন ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দুধ। দুধ পুষ্টিগুণে ভরপুর হয় ঢুকে সম্পূর্ণভাবে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ক্যালসিয়াম এর ক্ষেত্রে দুধের নাম সবার আগে চলে আসে। 

দুধে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন ডি সংযুক্ত। যা মানুষের হাড়কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে। তার পাশাপাশি বাজারে অনেক ধরনের দুধ পাওয়া যায় যেমন- সয়া মিল্ক, ট্রি বাদাম এর দুধ ইত্যাদি। যদি কোন মানুষের পশু- গরুর দুধে এলার্জি থাকে তাহলে, তারা এই ধরনের দুধ বাজার থেকে কিনে নিয়ে খেতে পারেন। 

দুধ	ক্যালসিয়াম এর পরিমাণ
মহিষ এর দুধ	১২১ মিলি গ্রাম
গরু’র দুধ	১১৮ মিলি গ্রাম

09. পনির

পনির অনেক সুস্বাদু একটি খাবার যেখানে প্রচুর পরিমাণের ক্যালসিয়াম আছে। শরীর ফিট রাখার জন্য কটেজ পনির খাওয়া শরীরে অনেক ক্যালসিয়াম যোগায়। পণ্যের বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায় যেমন- পনির কারি,পকিরা, সালাদ এছাড়া স্যান্ডউইচ। তো চলুন এই পনির ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সম্পর্কে জেনে আসা যায়। 

 

10. দই

মানুষের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আরও একটি দুর্দান্ত ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার হচ্ছে দই। আপনারা প্রতিদিন খাবার তালিকায় শাকসবজির পাশাপাশি, ভালো ক্যালসিয়াম পাওয়ার জন্য দই অন্তর্ভুক্ত করুন। শুধুমাত্র ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার না। দই এ আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, আয়োডিন ও জিং। 

বিভিন্ন পদ্ধতিতে খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে শরীরের ক্যালসিয়াম নিতে পারেন। বিশেষ করে সকালের নাস্তায় এবং দুপুরের খাবারে আপনারা দই রাখতে পারেন। আপনার ছেলে টক দই এবং মিষ্টি দই খেতে পারেন। 

11. টফু

আপনার শরীরের ক্যালসিয়াম ঘাটতে পূরণ করতে খেতে পারেন টফু। টফু তে আছে অসংখ্য পরিমাণের ক্যালসিয়াম। এই খাবারটি অনেক পুষ্টিকর হয়ে থাকে। 

টফু দেখতে সম্পূর্ণ পনির মত দেখায়। এই খাবারটি সয়াবিন দুধ থেকে তৈরি। এটি কোলেস্টেরল মুক্ত। সেই সঙ্গে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম ও পলি আনস্যাচুরেটড ফ্যাট অনেক বেশি। বর্তমানে যাদের দুগ্ধ জাত পণ্যে অ্যালার্জি রয়েছে তারা পণের পরিবর্তে, টফু খেতে পারেন।

12. ডিম ও সামুদ্রিক খাবার

নিরামিষ খাবারের মত, আমিষ খাবারগুলোতে ক্যালসিয়াম রয়েছে। যারা আমিষ খাদ্য তালিকা অনুসরণ করে, তারা কিন্তু ঘরোয়া উপায় হিসেবে, ডিম, মাংসা এবং সামুদ্রিক খাবার খাওয়া শুরু করতে পারেন।শাকসবজি, ফলমূল এর মত এ জাতীয় খাবার গুলোতে রয়েছে ভিন্নতা। মানুষ তাদের পছন্দমত খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক খাবারগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।  

তো ডিম ও সামুদ্রিক খাবার গুলোতে কি পরিমানের ক্যালসিয়াম রয়েছে। সে বিষয়ে জেনে নেয়া যায়। 

ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট সম্পর্কে

ক্যালসিয়াম কার্বনেট

অন্যান্য উৎস

ক্যালসিয়াম সম্পর্ক গুলোর অন্যান্য উৎস যেমন- ক্যালসিয়াম গ্লুকোনেট, ক্যালসিয়াম লেক্টেট, ক্যালসিয়াম ফসফেট, ক্যালসিয়াম সাইট্রেট ক ইত্যাদি। 

আপনারা একটি কথা সবসময় মনে রাখবেন, একেবারে কখনোই ৫০০ মিলিগ্রাম এর বেশি ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করবেন না। যদি 500 মিলিগ্রামের বেশি গ্রহণ করে ফেলেন তাহলে ক্যালসিয়াম অধিক কারণে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। তাই আপনাদের সঠিকভাবে বিষয়গুলো নজর রেখে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে হবে। 

শরীরে অত্যধিক ক্যালসিয়াম থাকার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া

ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের কিছু প্রশ্ন উত্তর

কিভাবে প্রাকৃতিক ভাবে শরীরে ক্যালসিয়াম পরিমাণ বাড়াতে হয়?

ডিম কি ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার?