আচার্য চাণক্যের সংক্ষিপ্ত জীবন কাহিনী

adx Ar
Adx AR

আচার্য চাণক্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয়

এই উপমহাদেশ তো বটেই সারা বিশ্বে তাকে অন্যতম প্রাচীন এবং বাস্তববাদী পণ্ডিত মনে করা হয়। মহাকবি কালিদাস যুগেরও অনেক আগে আবির্ভূত এই পণ্ডিত তার সময়ে থেকেই ভবিষ্যৎ দেখতে পেরেছিলেন। লিখে গেছেন অমর সব তত্ত্বগাথা।

যিনি চাণক্য ছিলেন তিনিই কৌটিল্য

চাণক্য [খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০ থেকে ২৮৩ অব্দ] ছিলেন প্রাচীন ভারতের পণ্ডিত, দার্শনিক ও রাজ উপদেষ্টা। প্রকৃতপক্ষে তিনি প্রাচীন তক্ষশীলা বিহারের অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যক্ষ ছিলেন। মৌর্য রাজবংশের প্রথম রাজা চন্দ্রগুপ্তের রাজক্ষমতা অর্জন ও মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অবদান অনস্বীকার্য। দার্শনিক প্রজ্ঞা আর কূটনৈতিক পরিকল্পনায় সিদ্ধহস্ত এই অসাধারণ প্রতিভাধর মানুষটির জন্ম বর্তমান পাকিস্তানের তক্ষশীলায়, যেখানে উপমহাদেশে উচ্চতর জ্ঞান আহরণের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপীঠ অবস্থিত ছিল। তিনি ছিলেন একজন শিক্ষক, দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রনায়ক যিনি ভারতীয় রাজনৈতিক গ্রন্থ ‘অর্থশাস্ত্র’ (রাজনীতি ও অর্থনীতির বিজ্ঞান) লিখেছিলেন। মৌর্য রাজবংশ প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের বিশ্বস্ত সহযোগী হয়ে একজন শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।  সম্রাটের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে, তিনি মগধ অঞ্চলের পাটলিপুত্রে শক্তিশালী নন্দ রাজবংশকে উৎখাত করতে চন্দ্রগুপ্তকে সাহায্য করেছিলেন এবং চন্দ্রগুপ্তকে নতুন ক্ষমতা অর্জনে সাহায্য করেছিলেন। তিনি চন্দ্রগুপ্তের পুত্র বিন্দুসারের উপদেষ্টাও ছিলেন। প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা এবং অর্থশাস্ত্র নামক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন। চাণক্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ে প্রাচীন ভারতের একজন দিকপাল ছিলেন এবং তার তত্ত্বগুলি চিরায়ত অর্থনীতির বিকাশ লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তার পাণ্ডিত্যের জন্য চাণক্যকে ভারতের মেকিয়াভেলি বলা হয়। তার কিছু নিজস্ব নীতি রয়েছে। এগুলোকে বলা হয় চাণক্য নীতি। 

 

চাণক্য নীতি

তাঁর লেখা নীতি শাস্ত্রে নানা অমূল্য পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন আচার্য চাণক্য। প্রাচীন ভারতের এই মহাপণ্ডিত ছিলেন একাধারে সর্বশাস্ত্রজ্ঞ, কূটনীতিজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক। তিনি যে কোনও বিষয়ের গভীরে গিয়ে পর্যালোচনা করতে জানতেন। জীবনকে বাস্তবতার নিরিখে পরিমাপ করতেন তিনি। সেই কারণে এত হাজার বছর পরেও তাঁর উপদেশ আজও সমান ভাবে কার্যকরী ও উপযোগী। তাঁর লেখা বই চাণক্য় নীতি-তে অসংখ্য উপদেশ দিয়ে গিয়েছেন তিনি। এই উপদেশগুলো সঠিক ভাবে মেনে চলতে পারলে তা আমাদের সাফল্য লাভের পথ সুগম করে। জেনে নিন আচার্য চাণক্যের দেখানো সাফল্য লাভের কিছু উপায়। মূলত, তার এই নীতিগুলো এক প্রকার মোটিভেশন হিসেবে কাজ করে আমাদের জীবনে।

 

 

আচার্য চাণক্যের কিছু শিক্ষণীয় কথা

• সন্তান সে, যে বাবার সেবা করবে। গৃহকর্তা সে, যে গোটা পরিবারের খেয়াল রাখে। বন্ধু সে, যাকে বিশ্বাস করা যায়। স্ত্রী সে, যে সংসারকে সুখে রাখবে। প্রত্যেকে যদি নিজের নিজের দায়িত্ব পালন করে, তাহলেই যে জীবন সুখে ও শান্তিতে অতিবাহিত হয়।

 

• কোনও দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি তৈরি হলে, সাবধানে সেই দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে আসুন৷ পরিবারের সবাইকেও সেই ভাবেই কোনও দ্বন্দ্ব থেকে বেরিয়ে আসতে উৎসাহ দিন৷ ত্যাগের কথা বলুন৷

 

• কখনো কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখতে নিষেধ করেছেন চাণক্য। তিনি বলেছেন, যখনই আপনি কোনও কাজ কাল করবেন বলে সরিয়ে রাখলেন, তখনই আপনি সাফল্যের থেকে একধাপ দূরে সরে গেলেন। আপনি যদি নিজের কাজ সময়ে না করেন, তখন শেষ মুহূর্তে আপনাকে হুড়োহুড়ি করে তা করতে হবে। তখন সেই কাজে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। তাই অবহেলা করে কোনও কাজ ফেলে রাখবেন না। চাণক্য বলেছেন যে সাফল্য ও ব্য়র্থতা আমাদের জীবনেরই অঙ্গ। সাফল্য পেলে আনন্দে ভেসে যাবেন না এবং ব্যর্থতার কারণে দুঃখে ডুবে যাবেন না। জীবনে যাই হোক, পরের কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।

 

• কখনও জীবনের শিক্ষানবিশ মনটিকে মরতে দেবেন না৷ সারা জীবন, কিছু-কিছু করে জিনিস শিখতে থাকুন৷ তাতে আপনার জীবনের অনেক সমস্যার সহজ সমাধান হবে৷ ছাত্রের মনন জীবনকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করে৷

 

• কখনো অন্যের সমালোচনা করবেন না। অন্যের সমালোচনা করে সময় নষ্ট করা এক ধরনের বোকামি। সমালোচনা যদি করতেই হয়, তাহলে মানুষের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে সমালোচনা করুন। মানুষের ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে কথা বললে, বুঝতে পারবেন আপনি তার ছেয়ে কতটা পিছিয়ে আছেন।

adx ar

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

adx ar
Comments

You must be logged in to post a comment.

adx ar
POPULAR ARTICLES
About Author