ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার উপায়
ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার জন্য আপনি আমাদের দেওয়া কিছু গাইড লাইন ফলো করেন। ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার জন্য আপনার মধ্যে প্রথমে যেটি থাকা খুব জরুরি, সেটা হচ্ছে আপনার নিজস্ব-আগ্রহ। আপনার আগ্রহ না থাকলে এই ছাত্র জীবনে আপনি কোন ভাল ফলাফল পাবেন না। যাহার ফলে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশ কমে যায়।
আচ্ছা যাই হোক, আমরা এবার মূল কথায় চলে যাই। সফলতার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কোন মাপ-কাটির দরকার নাই। সবাই সবার কর্মস্থল থেকে সফল হওয়াটাই হল মূল বিষয়। যা আপনাকে আলোর পথে নিয়ে যেতে অনেক সহায়তা করবে। আর ব্যক্তি জীবনে সফল হতে চাইলে ছাত্র জীবনে সফল হওয়াটাই অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের ছাত্র সমাজের মধ্যে উক্ত ধারণাটি না থাকার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই খুব মেধাবী স্টুডেন্টকেও ব্যর্থ হতে দেখা যায়। তাহলে কীভাবে একজন ছাত্র তার ছাত্র/কর্মজীবনে সফল হতে পারবে ? এবার আসুন আমরা জেনে নেই কীভাবে ছাত্র জীবনে সফল হওয়া যায়।
ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার জন্য আমি প্রথমেই বলব রুটিন তৈরি করা :-
উপরে রুটিন তৈরি করা মানে শুধু পড়ালেখার রুটিনকে বুঝানো হচ্ছে না। বরং আপনার দৈনন্দিন জীবনের সামগ্রিকভাবে পূর্ণাঙ্গ সঠিক একটি রুটিন তৈরি করানোকে বুঝানো হয়েছে। আপনার প্রতিদিনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার আলোকে খুব সহজেই তৈরি করতে পারবেন।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠা শুরু করে রাত্রে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত সম্পাদিত সব কিছু আপনার এই রুটিনে যুক্ত থাকতে হবে। উদাহরণ সরুপ ঃ খাওয়া-দাওয়া, দাঁত ব্রাশ করা, ফ্রেশ হওয়া, প্রার্থনা, পড়া-লেখা, গোসল করা ইত্যাদি। এভাবে সুন্দর ও গোছানো ভাবে একটি রুটিন তৈরি করে নিতে হবে। আর আপনার সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই এই রুটিনটি ফলো করে আপনার প্রতিদিনের কার্যক্রমগুলি চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই আপনি ছাত্র জীবনে খুব সহজেই সফলতার মুখ দেখতে পাবেন।
নির্দিষ্ট কাজ করা
একই টাইমে আমরা একাধিক কাজ করা থেকে বিরত থাকব। আমেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গেল যে, যে সকল শিক্ষার্থী একই সময়ে একাধিক কাজগুলো করে থাকে এই সব ছাত্র/লোকদের তুলনায় নির্দিষ্ট একটি কাজ করা ব্যক্তিগণই বেশি প্রোডাক্টিভ। তাই আমরা মানব জীবনে চেষ্টা করব যে, মাল্টিটাস্ক মূলক একই সময়ে কোন কাজ না করা। যেমন- আপনি পড়া-শুনা করতেছেন, তখন হাত দিয়ে আর কোন কাজ না করা। যাহার ফলে আপনার ছাত্র জীবনেই সপল হওয়ার চান্সটা দ্রুত পেয়ে যাবেন।
ছোট ছোট অংশ করে পড়ালেখা করা-
গবেষণা করে দেখা গেছে যে, একটি মানুষের উপর যখন খুব বেশি পরিমাণে প্রেসার থাকে, তখন তার কার্যক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কমে যায়। যাহার কারণে একজন ছাত্রকে তার বিদ্যালয়ের সিলেবাসের উপর ভিত্তি করে ছোট ছোট অংশ করে ভাগ করে নেওয়া হয়। এতে করে একটি ছাত্রের পূর্বের ন্যায় পড়া-লেখার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি কার্যক্ষমতাও অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। বিশ্বের নান দেশ যেমন- জাপান-সহ প্রায় দেশের শিক্ষার্থীরাই এই টেকনিকগুলো অবলম্বন করে থাকে।
নিয়মিত ঘুমাতে যাওয়া -
প্রতিটি মানুষেরই নিয়মিত ঘুমের প্রয়োজন আছে। সেখানে ছাত্রদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ঘুমাতে হবে। আপনার রুটিনের মধ্যে একটি অংশে ঘুমকে প্রাধান্য দিতে হবে। কোন ভাবেই আপনার রুটিন থেকে ঘুমের সময় টুকুকে তুচ্ছ মনে করে বাদ দেওয়া যাবে না। আপনার ছাত্র জীবনে রুটিনের মধ্যে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ০৮ ঘন্টা ঘুমের জন্য রাখতে হবে। কেননা ঘুমের মাধ্যমে আপনার মস্তিস্ক ঠিক থাকে। প্রেসার কমে যায়। কার্যদক্ষতাও বেড়ে যায়। ছাত্রদেরকে একটি কাজের প্রতি মনোযোগ-সহ তীক্ষè করে। তাই আপনার ছাত্র জীবনে রুটিনের মধ্যে অবশ্যই ঘুমকে প্রাধান্য দিতে হবে।
নোট তৈরি করা -
বিদ্যালয় থেকে এবং সিলেবাস থেকে আমরা যে পড়া-শুনা করে থাকি। সে গুলো থেকে আমাদের নিয়মিত নোট নেওয়া দরকার। আর তা অবশ্যই আমাদের পরীক্ষার সময় নিয়মিত পড়তে হবে। আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, আমি কেন নোট করব ? এর উপকারীতা কী ? আসলে নোট করে নেওয়া মানে আপনার বইয়ের মধ্যে বিশাল একটি পড়াকে আপনার নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিজের মতো করে ছোট করে পড়া। যা পরীক্ষার আগে আপনি রাতে খুব সহজেই পুরো সিলেবাসটা রিভিশন দিতে পারবেন। তাই আমরা আমাদের পড়ালেখাকে নোট তৈরি করবো।
নিয়মিত পড়া-লেখা করা-
ছাত্র জীবন মানে আপনার প্রচুর পড়াশোনা করা। কীভাবে আপনি প্রচুর পড়াশোনা করবেন। এর বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ আছে। যেমন- পড়তে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, আর যে জিনিসগুলো আপনার মূহুর্তেই মধ্যেই কাজে লাগবে, সে-গুলো আপনার সন্নিকটে রাখা। এভাবে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন। আর তখনই আপনি আপনার ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার উপায় হিসেবে উপরোক্ত স্টেপগুলোকে কাজে লাগাতে পারবেন।
আপনার পড়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা-
আপনি মনোযোগ সহকারে পড়া-লেখার জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট স্থান আপনাকে বেচে নিতে হবে। আর সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্যও আপনাকে অনেক দিকগুলো অনুসরণ করতে হবে। যেমন- এমন জায়গায় পড়ালেখা করা যাবে না, যেখানে বিরক্তকর শব্দ আসে। টিভি, রেডিও কিংবা মিউজিক জাতীয় সাউন্ড আসে, তেমন জায়গায় পড়া-লেখার জায়গা পরিত্যাগ করতে হবে। সর্বোপরি নিরব ও মনোযোগ সহকারে পড়া-লেখা করা যায় এমন একটা জায়গা বেচে নিতে হবে। এতে করে ছাত্রদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ বাড়বে এবং প্রচুর পড়তে ভালো লাগবে।
ছাত্র জীবনে সফল হওয়ার জন্য যে জিনিস গুলো গুরুত্বপূর্ণ-
আপনি ছাত্র জীবনে হওয়ার জন্য অবশ্যই এই গুণগুলো আপনার মধ্যে থাকতে হবে। যেমন- ধৈর্য ধরে পড়াশোনা করা, পরিশ্রম করা এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছার জন্য আগ্রহ থাকতে হবে। আর তখনই আপনি আপনার ছাত্র জীবনে সফল হতে পারবেন।
একজন শিক্ষার্থীর সাফল্যের অর্থ কি ?
ছাত্রদের জন্য সাফল্যের অর্থ প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা হওয়াটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ব্যক্তি এবং তাদের প্রধান লক্ষ্যগুলো কি, সেটার উপরেই নির্ভর করতে প্রত্যেকটা ছাত্র-ছাত্রীদের সফলতার মানে। অনেক শিক্ষার্থী আছেন যাদের সাফল্য অর্জন মানে হল উচ্চ গ্রেড অর্জন করা এবং গ্রেজুয়েশন বা অন্যান্য পরীক্ষাতে অংকের সাথে উত্তীর্ণ হওয়া। আবার কিছু কিছু শিক্ষার্থী/ছাত্র ছাত্রী রয়েছেন যাদের সাফল্য (Success) মানে, তার নিজের মধ্যে বিশেষ দক্ষতা বিকাশ করা যেটা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে অনেকাংশে কাজে লাগবে।
আমি এতটুকু লেখেই আমার লেখাটা শেষ করলাম। আর আপনি যদি আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে সামান্য উপকৃত হন। তাহলে আমাদের সাইটটিতে ভিজিট সহ একটি লাইক/কমেন্ট করে যাবেন।
পোস্ট টি ভালো লাগলে অবশ্যই সবাই লাইক/কমেন্ট করে যাবেন।
You must be logged in to post a comment.